ঢাকা ০১:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo পটুয়াখালীতে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিলো নৌবাহিনী Logo ঈদে বাড়ি ফেরা লোকাল বাসে ৫৫০ টাকার ভাড়া ৯০০, ভোগান্তিতে যাত্রীরা Logo ফরিদপুরে বাস-মাহেন্দ্র মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৫ Logo বুধবার খেলবেন হামজা, অভিষেক হতে পারে ফাহামিদুলের Logo মুরগির ঘরে বসবাস করা সেই লালবড়ুর পাশে দাঁড়ালেন র‍্যাব-ইউএনও Logo দেশের প্রথম মনোরেল হচ্ছে চট্টগ্রামে, চুক্তি সই Logo জামায়াতের নিবন্ধন-প্রতীক ও ইশরাক ইস্যুতে রায়ের কপির অপেক্ষায় ইসি Logo গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েই দায়সারা পুলিশের, আন্দোলনে নগরবাসীর ভোগান্তি Logo তারেক রহমান ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে, মান-অভিমানের সুযোগ নেই Logo দাবি পূরণের আশ্বাসে এনবিআরে কর্মবিরতি স্থগিত

এআই চিপ বাজারের নিয়ন্ত্রণ চান ট্রাম্প

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:৪৭:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫ ৬ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিশ্বব্যাপী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চিপের সরবরাহ সীমিত করতে বাইডেন প্রশাসনের সময়ে জারি হওয়া একটি নিয়মে বড় পরিবর্তনের পথে হাঁটছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সংশ্লিষ্ট তিনটি সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ‘ফ্রেমওয়ার্ক ফর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ডিফিউশন’ নামের নিয়মে থাকা ‘টিয়ারভিত্তিক’ চিপ বিতরণের ব্যবস্থা বাতিল করে বিশ্বব্যাপী দ্বিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে লাইসেন্স ব্যবস্থার কথা ভাবছে ট্রাম্প প্রশাসন।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ ‘ফ্রেমওয়ার্ক ফর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ডিফিউশন’ নামে একটি নিয়ম জারি করে, যার উদ্দেশ্য হলো উন্নত এআই চিপ ও মডেল ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের মধ্যে উন্নত কম্পিউটিং ক্ষমতা সীমাবদ্ধ রেখে চীনসহ ‘উদ্বেগজনক’ দেশগুলোকে তা থেকে দূরে রাখা হচ্ছে। বাইডেন প্রশাসনের মেয়াদ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ আগে নিয়মটি জারি হয় এবং আগামী ১৫ মে থেকে তা কার্যকর হবে।

এই নিয়ম অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের মধ্যে ১৭টি দেশ এবং তাইওয়ান ‘প্রথম স্তরে’ থাকায় তারা অনায়াসে চিপ পেতে পারে। ‘দ্বিতীয় স্তরে’ থাকা প্রায় ১২০টি দেশ নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে চিপ পায় আর ‘তৃতীয় স্তরে’ থাকা চীন, রাশিয়া, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার মতো দেশগুলো পুরোপুরি নিষিদ্ধ।

তবে ট্রাম্প প্রশাসনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই স্তরভিত্তিক ব্যবস্থা সরিয়ে দিয়ে চিপ রপ্তানি একটি ‘চুক্তিনির্ভর’ কাঠামোয় নিয়ে আসা হতে পারে। এতে করে যুক্তরাষ্ট্র সহজেই চিপ সরবরাহকে বাণিজ্যিক আলোচনায় কৌশলগত হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ট্রাম্প প্রশাসনের সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রস বলেন, ‘স্তরভিত্তিক ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে কেউ কেউ সমর্থন দিয়েছেন। এখনো বিষয়টি চূড়ান্ত নয়, তবে দুই দেশের সরকারের মধ্যে চুক্তির মডেল একটি সম্ভাব্য বিকল্প হতে পারে।’

এদিকে এই নিয়মে আরেকটি পরিবর্তন নিয়ে ভাবা হচ্ছে, যেখানে বর্তমানে ১ হাজার ৭০০টির কম এনভিডিয়ার শক্তিশালী এইচ ১০০ চিপ অর্ডার করলে শুধু সরকারকে জানানো লাগে, লাইসেন্স লাগে না। নতুন প্রস্তাবে এই সীমা ৫০০ চিপে নামিয়ে আনার কথা ভাবছে প্রশাসন।

বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিপণ্য সরবরাহে মার্কিন আধিপত্য রক্ষায় এ ধরনের বিধিনিষেধ গুরুত্বপূর্ণ হলেও সমালোচকদের মতে এতে অনেক দেশ চীনের ‘অবাধ, সস্তা বিকল্পের’ দিকে ঝুঁকে পড়তে পারে। ওরাকলের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট কেন গ্লুয়েক বলেন, ‘বর্তমান স্তরভিত্তিক ব্যবস্থা অযৌক্তিক। ইসরায়েল ও ইয়েমেনকে একই স্তরে রাখা সত্যিই প্রশ্নবিদ্ধ।’

এ ছাড়া চিপ নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত নিয়ম নিয়ে গত জানুয়ারিতে সমালোচনা করে এনভিডিয়া ও ওরাকল। যুক্তরাষ্ট্রের কমার্স ডিপার্টমেন্ট এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে কয়েকজন রিপাবলিকান সিনেটর সম্প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিককে চিঠি দিয়ে এই নিয়ম তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, ‘সরল কিন্তু শক্তিশালী’ নিয়ম তৈরি করতেই নতুন এই উদ্যোগ।

Loading

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

এআই চিপ বাজারের নিয়ন্ত্রণ চান ট্রাম্প

আপডেট সময় : ০৩:৪৭:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

বিশ্বব্যাপী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চিপের সরবরাহ সীমিত করতে বাইডেন প্রশাসনের সময়ে জারি হওয়া একটি নিয়মে বড় পরিবর্তনের পথে হাঁটছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সংশ্লিষ্ট তিনটি সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ‘ফ্রেমওয়ার্ক ফর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ডিফিউশন’ নামের নিয়মে থাকা ‘টিয়ারভিত্তিক’ চিপ বিতরণের ব্যবস্থা বাতিল করে বিশ্বব্যাপী দ্বিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে লাইসেন্স ব্যবস্থার কথা ভাবছে ট্রাম্প প্রশাসন।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ ‘ফ্রেমওয়ার্ক ফর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ডিফিউশন’ নামে একটি নিয়ম জারি করে, যার উদ্দেশ্য হলো উন্নত এআই চিপ ও মডেল ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের মধ্যে উন্নত কম্পিউটিং ক্ষমতা সীমাবদ্ধ রেখে চীনসহ ‘উদ্বেগজনক’ দেশগুলোকে তা থেকে দূরে রাখা হচ্ছে। বাইডেন প্রশাসনের মেয়াদ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ আগে নিয়মটি জারি হয় এবং আগামী ১৫ মে থেকে তা কার্যকর হবে।

এই নিয়ম অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের মধ্যে ১৭টি দেশ এবং তাইওয়ান ‘প্রথম স্তরে’ থাকায় তারা অনায়াসে চিপ পেতে পারে। ‘দ্বিতীয় স্তরে’ থাকা প্রায় ১২০টি দেশ নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে চিপ পায় আর ‘তৃতীয় স্তরে’ থাকা চীন, রাশিয়া, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার মতো দেশগুলো পুরোপুরি নিষিদ্ধ।

তবে ট্রাম্প প্রশাসনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই স্তরভিত্তিক ব্যবস্থা সরিয়ে দিয়ে চিপ রপ্তানি একটি ‘চুক্তিনির্ভর’ কাঠামোয় নিয়ে আসা হতে পারে। এতে করে যুক্তরাষ্ট্র সহজেই চিপ সরবরাহকে বাণিজ্যিক আলোচনায় কৌশলগত হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ট্রাম্প প্রশাসনের সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রস বলেন, ‘স্তরভিত্তিক ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে কেউ কেউ সমর্থন দিয়েছেন। এখনো বিষয়টি চূড়ান্ত নয়, তবে দুই দেশের সরকারের মধ্যে চুক্তির মডেল একটি সম্ভাব্য বিকল্প হতে পারে।’

এদিকে এই নিয়মে আরেকটি পরিবর্তন নিয়ে ভাবা হচ্ছে, যেখানে বর্তমানে ১ হাজার ৭০০টির কম এনভিডিয়ার শক্তিশালী এইচ ১০০ চিপ অর্ডার করলে শুধু সরকারকে জানানো লাগে, লাইসেন্স লাগে না। নতুন প্রস্তাবে এই সীমা ৫০০ চিপে নামিয়ে আনার কথা ভাবছে প্রশাসন।

বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিপণ্য সরবরাহে মার্কিন আধিপত্য রক্ষায় এ ধরনের বিধিনিষেধ গুরুত্বপূর্ণ হলেও সমালোচকদের মতে এতে অনেক দেশ চীনের ‘অবাধ, সস্তা বিকল্পের’ দিকে ঝুঁকে পড়তে পারে। ওরাকলের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট কেন গ্লুয়েক বলেন, ‘বর্তমান স্তরভিত্তিক ব্যবস্থা অযৌক্তিক। ইসরায়েল ও ইয়েমেনকে একই স্তরে রাখা সত্যিই প্রশ্নবিদ্ধ।’

এ ছাড়া চিপ নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত নিয়ম নিয়ে গত জানুয়ারিতে সমালোচনা করে এনভিডিয়া ও ওরাকল। যুক্তরাষ্ট্রের কমার্স ডিপার্টমেন্ট এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে কয়েকজন রিপাবলিকান সিনেটর সম্প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিককে চিঠি দিয়ে এই নিয়ম তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, ‘সরল কিন্তু শক্তিশালী’ নিয়ম তৈরি করতেই নতুন এই উদ্যোগ।

Loading